কবিতা

নষ্টালজিক | উম্মে হাবিবা চৌধুরী

উম্মে হাবিবা চৌধুরী::

নীল আকাশে
সাদা মেঘের ভেলায় ভেসে ভেসে
কাশফুলে
শুভ্র ধবল মালা পরে,
স্নিগ্ধ সজল মেঘ ঘন ঋতু
বর্ষা শেষে-
ভাদ্র-আশ্বিন মাস
দোঁহার মায়াডোরে
নিবিড় পল্লবিত বন্ধনে,
প্রকৃতির আঁচলে
ষড়ঋতুর আবর্তনে
বৈচিত্র্যময়ী মন্দ্রিত মঞ্জরী
শরত কুঞ্জের আগমনে-
মনপবনে লেগেছে দোলা,
কোথাও আমার হারিয়ে যেতে
নেইকো মানা।

নদীর ধারে কাশবনে
হৃদ গগনে মধুর কুজনে
স্বচ্ছ হাওয়ায় বাঁশরীর তানে,
ভাবছি বসে
একা একা
ছোট্ট বেলার কথা,
শরতের শিশির ঝরা
শিউলি ফুলে
গেঁথেছি কতো মালা,
ফুল গন্ধ চাঁপায়
পড়েছি নোলক নাসায়,
বেলী ফুলে হাতে বালা
কপোলে লাল টিপ কৃষ্ণচূড়ায়।

বৃষ্টি ঝরা
রোদ জ্বলা দুপুরে
খেলেছি পুতুল পুতুল খেলা
বারান্দায় বসে,
দিয়েছি পুতুলের বিয়ে।
শরত বিকেলে মিষ্টি রোদে
খেলেছি হাডুডু
লুকোচুরি দাড়িয়াবান্ধা,
শৈশব কৈশোরের সেইসব দিনগুলি
ফিরে হবেনা আর পাওয়া,
যায়রে বয়ে যায় যে বেলা।

তপ্ত গরমে
ভাদ্র আশ্বিন মাসে
আচমকা ঝুম বৃষ্টিতে
ভিজেছি বহুবার,
মায়ের অগোচরে
করেছি মজা অনেকবার,
গা কাঁপুনি জ্বরে
অসুস্থ হয়ে
শুনেছি মায়ের বকা শতোবার।
স্মৃতির পারাবারে
বিষন্ন মন সজল নয়নে
গুমরি গুমরি ওঠে
দূর অতীতে,
সময়ের গতিতে
বরষে বরষে
যায় চলে
প্রতিটি ঋতু
প্রতিটি দিনক্ষণ মুহুর্ত
অন্তহীন পথে।

দৈবাৎ অম্বরে অম্বরে
হঠাৎ হঠাৎ
মেঘ ঘনিয়ে ঘনিয়ে
উষ্ণ অভিমানী হাওয়া,
থেমে থেমে
ঝরো ঝরো
বৃষ্টি ঝরিয়ে
বিরহ বিধুর দীঘল শ্বাসে
বিদায় রাগিনী রঞ্জিত মলয়ে
সুর তুলেছে
শ্যামলিয়া ম্লানছায়া
হিমেল সমীরণে
শরতের শারদীয় কুঞ্জে।

Please follow and like us:

Related Articles

Back to top button