শিল্প ও সাহিত্য

ঐতিহাসিক গাদীরে খুম দিবস

শেখ বিবি কাউছার::

সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ পাকের জন্য এবং অগণিত দরুদ ও সালাম তাঁর প্রিয় হাবিব মুহাম্মদ মুস্তাফা সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আহলে বাইত এর উপর।

১৮ই জিলহজ্ব গাদীরে খুম দিবস।মুসলিম উম্মাহর জন্য দিনটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। অথচ আমরা খুব কম মানুষই এ সম্পর্কে জানি।

৬৩২ খ্রিঃ এই দিনেই মহান রাব্বুল আলামিন প্রদত্ত এবং হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনীত ইসলাম ধর্ম পূর্ণতা লাভ করে।

বিদায় হজ শেষে মদিনার অভিমুখে যাত্রার সময় রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গাদীর-এ-খুম নামক স্থানে এসে পৌঁছালে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে নিন্মের আয়াতটি নাজিল হয়।“ হে নবি! আপনার ওপর আল্লাহ যে বাণী নাজিল করেছেন তা সবার কাছে পৌঁছে দেন।যদি তা পুরোপুরি পৌঁছে না দেন তবে আপনার দায়িত্ব অসম্পূর্ণ থাকবে।সত্য অস্বীকারকারীদের হাত থেকে আল্লাহই আপনাকে রক্ষা করবেন। সত্য অস্বীকারকারীদের আল্লাহ কখনো সাফল্যের পথ দেখান না।”( সূরা-মায়েদা, পারা-৬,আয়াত-৬৭)।

এর সাথে সাথে রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গাদীর-এ-খুম নামক স্থানে এক লক্ষ চব্বিশ হাজার জনসম্মুখে হযরত মাওলা আলি (রাঃ)কে সমস্ত মুমিনদের অভিভাবক হিসেবে ঘোষণা দেন, এবং বলেন, “ আমি যার মওলা আলি তাঁর মওলা, হে আল্লাহ তুমি তার সাথে বন্ধুত্ব রাখো যে আলির সাথে বন্ধুত্ব রাখে এবং তুমি তার সাথে শত্রুতা রাখো যে আলির সাথে শত্রুতা রাখে।”
এর পর উপস্থিত সমস্ত সাহাবিগণ এমনকী হযরত আবুবকর(রাঃ) ও হযরত উমর (রাঃ) এসে মওলা আলি(রাঃ) এঁর সাথে কোলাকুলি করে বলেন, “ হে আবু তালিবের শাহ্জাদা আপনাকে অসংখ্য মোবারকবাদ, আজ থেকে আপনি আমার ও প্রত্যেক মুমিন পুরুষ ও মহিলার মওলা হয়ে গেলেন।”

গাদীর-এ-খুমঃ গাদীরে খুম স্থানটি মক্কা ও মদিনা শরীফের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত। খুম স্থানটির যেখানে রসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভাষণ দিয়েছিলেন সেখানে একটি পুকুর বা জলাশয় ছিল। তাই যে স্থানে তিনি ভাষণ দিয়েছিলেন সে স্থানটিকে ‘গাদীরে খুম’ বলা হয়। যেহেতু পুকুরের পাশে রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভাষণ দিয়েছিলেন তাই এই ভাষণটি ‘গাদীরে খুমের ভাষণ’ নামে খ্যাত।

রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলে গেছেন, “ আমি তোমাদের কাছে দু’টি জিনিস রেখে যাচ্ছি – তার একটি হলো পবিত্র কোরআন, অপরটি হলো আমার আহলে বাইত। এই দুইটি জিনিসকে যদি তোমরা আকঁড়ে ধরো তাহলে কেয়ামত পর্যন্ত বিভ্রান্ত হবে না।” (সহি মুসলিম, ৬ষ্ঠ খন্ড, কিতাবুল ফাযাইল,পৃঃ ১০২, আহমদ ইবনে হাম্বাল,ইবনে আসাকির ইত্যাদি)।

আমরা যদি প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আহলে বাইতের আদর্শে নিজেদের জীবন সাজাতে পারি তাহলে আমরা হবো পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষ।

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের তওফিক দান করুন আমরা যেন পবিত্র কোরআন,হাদিস ও আহলে বাইতের আদর্শের ওপর জীবনব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারি।

লেখক: শেখ বিবি কাউছার, প্রভাষক ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ নোয়াপাড়া ডিগ্রি কলেজ, রাউজান, চট্টগ্রাম।

Please follow and like us:

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button