রাউজানের মাঠে মাঠে সরিষা ফুলের সৌরভ
গত মঙ্গলবার সরিষা ক্ষেতের এই ছবিটি চিকদাইর ইউনিয়ন থেকে উঠানো
মীর আসলাম, রাউজান:: রাউজানের কৃষকদের মাঝে সরিষা চাষে আগ্রহ বেড়েছে। এখন মাঠে মাঠে দেখা যাচ্ছে সরিষা ফুলের সৌরভ। সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে স্থানীয় কৃষকরা আবাদি জমিতে ব্যস্ততম সময় কাটাচ্ছে ক্ষেতের পরিচর্যায়। যুবক যুবতিরা মাঠে নেমে ফুলের সৌরভের মধ্যে ছবি উঠাচ্ছে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিগত কয়েক মাস থেকে বাজারে ভোজ্য তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকরা রবি মৌসুমে সরিষা চাষে আগ্রহী হয়েছে।
এছাড়া বোরো ধানের চাষাবাদ হয় না এমন জমিতে মৌসুমী রবি চাষাবাদে কৃষকদের আগ্রহী করতে সরকার প্রণদনা কর্মসূচির অধীনে কৃষি বিভাগ থেকে বিনামুল্যে সার বীজ দিয়েছে।
রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর পক্ষ থেকেও বিভিন্ন ধরণের সহায়তা পেয়েছে কৃষকরা।
পরিদর্শন কালে দেখা গেছে উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার কিছু এলাকায় সরিষা চাষ হয়েছে।
সরিষার সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে চিকদাইর, ডাবুয়া ও হলদিয়া, উরকিরচর ইউনিয়নে। চারটি ইউনিয়নে মাঠে মাঠে এখন সরিষার হলদে দৃষ্টিআকর্ষণ করা ফুল।
উরকিরচর ইউনিয়নের কৃষক শেখ নুরুল আমিন বলেছেন তিনি প্রথম বারের মত তিন কানি জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। তিনি ক্ষেতে ফুলের ঝিলিক দেখে ফলনের আশাবাদি।
চিকদাইর ইউনিয়নের কৃষক মিলন বিশ্বাস বলেছেন তিনি আগেও সরিষা চাষা করেছেন। কিন্তু লাভের মুখ দেখেননি। এবার সরকার ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের সহায়তা পেয়ে দেড় কানি জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। মাঠের ফলন দেখে তিনি এবার লাভের আশায় বুক বেঁধেছেন। এখন প্রতিদিন ক্ষেতে পরিচর্যায় সময় দিচ্ছেন।
রাউজান উপজেলা কৃষি অফিসার ইমরান হোসাইন বলেছেন এবার আমরা অনাবাদি জমিতে ফসল ফলানোর উপর আমরা বেশি জোর দিয়েছি। যেসব এলাকায় বোরো চাষাবাদ হয় না সেখানে আমরা কৃষকদের উদ্বুদ্ব করেছি রবি শষ্য ফলানোর। মাঠ পর্যায়ে থাকা কৃষিকর্মকর্তরা কৃষকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করে পরামর্শ দিচ্ছে। এই কৃষি কর্মকর্তার মতে রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর অনুপ্রেরণা ও সরকারের দেয়া প্রণোদনায় এবার চাষাবাদে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা যায়, এবছর ৩শত ৭৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। গত বছর এই উপজেলায় সরিষা চাষাবাদের আওতায় ছিল মাত্র ১শত ৪৫ হেক্টর জমি। সূত্র মতে অগ্রহায়ন মাসের শুরুতে কৃষকরা সরিষা চাষাবাদে মাঠে নামে। বীজ ছিঁটানোর তিন মাসের মধ্যে গাছে ফলন আসে। মাঘের শেষে কৃষকরা বীজ সংগ্রহ কাজ শুরু করবে। মাঠ পর্যায়ে থাকা কর্মকর্তারা বলেছেন এবার আবহাওয়া ভাল, সুফল পাচ্ছে কৃষকরা। যেভাবে ফলন দেখা যাচ্ছে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে সরিষাসহ সবধরণের রবিশষ্যে ভাল ফলন পাওয়া যাবে।
উল্লেখ্য যে, এবার রাউজানে ১০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী, ১৪৫ হেক্টর জমিতে বাদম চাষও হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের আশা এসব ফসল ঘরে তুলতে পারলে প্রক্রিয়াজাত করে উল্লেখযোগ্য পরিমান ভোজ্য তেল পাওয়া যাবে।