আমার ক্যাম্পাস

রাউজানে দরিদ্র ঘরের মেয়ে সাদিয়ার জিপিএ-৫ পাওয়ার সাফল্য

আমির হামজা, রাউজান:: রাউজানের এক দরিদ্র ঘরে জন্ম সাদিয়ার। ছোট বেলা থেকে পড়ালেখার প্রতি ছিলো ব্যাপক আগ্রহ। শতকষ্টের মধ্যে মেয়েকে পড়ালেখা করিয়েছেন দিনমজুর বাবা মো: জমির উদ্দিন।

অদম্য মেধাবী সাদিয়া শতকষ্টের মাঝে পড়ালেখা চালিয়ে এসএসসিতে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে হতে জিপিএ-৫ পেয়েছে। গত ২০ বছরে এই স্কুল থেকে সাদিয়াই প্রথম জিপিএ-৫ পেয়েছে।

তার সাফল্য অর্জনে আনন্দিত স্কুলের শিক্ষক’রা। উপজেলার কদলপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ কদলপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসএসি পরীক্ষা অংশগ্রহণ করেন সাদিয়া।

এছাড়াও সাদিয়ার পাশাপাশি এই স্কুল থেকে অনেক শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল করেছেন।

জানা যায়, সাদিয়ার পরিবারে অভাব ছিল নিত্যসঙ্গী। শৈশব থেকে এই মেধাবী শিক্ষার্থী তার পরিবারে দারিদ্র্য দেখেছেন, কিন্তু পড়ালেখায় ছিলেন সব সময় ভালো। মেধাবী ছাত্রী হিসেবে গ্রামে তার একটা আলাদা পরিচয় আছে। বাবা অন্যের জমিতে কাজ করতেন। এমন শত কষ্টের মাঝে সাফল্য এনে তাক লাগিয়ে দিয়েছে দরিদ্র ঘরের মেয়ে সাদিয়া।

সাদিয়া উপজেলার পাহাড়তলী ইউনিয়নের ঊনসত্তর পাড়া গ্রামের শাহাদুল্লাহ কাজীর বাড়ি কৃষক মোঃ জমির উদ্দিনের মেয়ে।

বাবা একজন বর্গচাষী ও দিনমজুর। অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষ করেন। পাশাপাশি দিনমজুরী করে সংসার চালান। দিনমজুর বাবার টাকায় সংসার আর ৩ ভাই-বোনের পড়াশোনার খরচ যোগাতে গিয়ে বারবার হতাশ হয়েছে সাদিয়া। তবুও শত কষ্টের মাঝেও পড়াশোনা চালিয়ে এখন সে একজন ব্যাংকার হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। কিন্তু তাতে বাঁধা শুধু দারিদ্র্য।

সাদিয়া বলেন, আমার কষ্ট বিফলে যায়নি। ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি আমাদের মানুষের মতো মানুষ করতে বাবা-মা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। বাবা দিনমজুরী আর কৃষি কাজ করা এমন একটি পরিবার থেকে পড়াশোনা করা অনেক কষ্টসাধ্য ছিল। বাবা মায়ের পাশাপাশি আমার স্কুলের শিক্ষকদের উৎসাহ পেয়েছি। স্কুলের প্রধান শিক্ষক দোলন কান্তি বড়ুয়া স্যারের সহযোগিতায় স্কুলে বিনামূল্যে পড়ালেখা করার সুযোগ পেয়েছি। পাশাপাশি শিক্ষক আবদুল গফুর স্যারের সহযোগিতায় পড়ালেখায় এই পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছি।

সেই জানান সামনে আরো ভালো ফলাফল করে উচ্চশিক্ষা অর্জন করে একটি ভালো চাকরি করে যেন বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে পারি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দোলন কান্তি বড়ুয়া জানান, আমাদের স্কুলের সাদিয়া অদম্য মেধাবী একজন শিক্ষার্থী। তার পরিবার অস্বচ্ছল। এমন পরিবার থেকে এই স্কুলের অন্যান্য শিক্ষার্থীদের চেয়ে পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করায় আমরা মুগ্ধ হয়েছি। আর্থিক সহযোগিতা পেলে মেয়েটি জীবনে ভালো কিছু করতে পারবে। দোয়া করি সে জীবনে যেন অনেক বড় হয়।

Please follow and like us:

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button