ফিচার

রাউজান থেকে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিতে ভারতে যান খোকন

আমির হামজা, রাউজান:: মুক্তিযুদ্ধ বাঙালি জাতির সবচেয়ে একটি স্বরণীয় ইতিহাস। পাকিন্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ ৯টি মাস যুদ্ধের মধ্যদিয়ে আমরা লাভ করেছি লাল-সবুজের পতাকার মাঝে একটি স্বাধীন বাংলাদেশ। ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয় চূড়ান্ত বিজয়।

সেই যুদ্ধে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা খোকন কান্তি বড়ুয়া……..

১৯৭১ সালে হানাদার বাহিনীরা যখন চট্টগ্রামের হাটহাজারী থেকে রাউজানের দিকে দফায় দফায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীরা গোলাগুলি শুরু করেন। তখন এই গোলাগুলির শব্দে দুই উপজেলরার আকাশ বাতাস প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। মানুষের মাঝে শুরু হয় কান্নার আওয়াজ। যে যেখানে পেড়েছে পালিয়ে জীবন বাঁচাতে গ্রাম ছেড়ছেন।

হাটহাজারী থেকে যখন পাকিস্তানিরা রাউজানের দিকে গোলাগুলি শুরু করেন তখন গহিরা গ্রামের বীর মুক্তিযুদ্ধা খোকন কান্তির বড়ুয়া বাড়িতে আগুন লেগে যায়। এরপর তারা সেখান থেকে চলেযান ফটিকছড়ি আব্দুল্লাহপুর গ্রামে তাদের মামার বাড়িতে।

মাঝে মাঝে নিজের গ্রামের আসতেন তারা, এই সময়ে এদিক পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা রাউজানের গহিরা চলে আসেন, সেই সময়ে মুক্তিযুদ্ধা খোকন এর মা শুভদা বালা বড়ুয়া ছিলেন পুকুরে। তখন তার মা হানাদার বাহিনীদের দেখে ভয়ে পুকুরে ঘাটের নিছে লুকিয়ে পড়েন। সেইদিন তার মায়ের ভয়ের সেই দূশ্য দেখে খোকন বড়ুয়া জেগে ওঠলেন, তিনিও শপথ নিলেন এই দেশের জন্য কিছু একটা করতে হবে। সেদিন থেকে যুদ্ধে যাওয়ার জন্য মনস্থির করলাম।

“৩টি কবুতর বিক্রি করে কিছু চিরা ও মিঠা কিনে টানা কয়েকদিন হেঁটে হেঁটে। মুক্তিযুদ্বের প্রশিক্ষণ নিতে সোজা ভারতে পৌঁছি।

ভারতে যাওয়ার আগে আমরা প্রথমে রাঙামাটি রাজবাড়ি একটি পাহাড়ে বিশ্রাম নেওয়ার সময়। কিছু পাহাড়ীর চাকমা রাজাকার’রা আমাদের দেখে পাকিস্তানি বাহীদের খবর দিলে তারা এসে আমাদের আক্রমণ শুরু করেন। সেখানে আমার ১৮৬ জনের মধ্যে, ফটিকছড়ি থানার আবদুল্লাপুর গ্রামের দীপক বড়ুয়া ও হাটহাজারী থানার আমান উল্লাহ্ নামে দুইজন নিহত হয়।

এরপর আমরা বাকিরা পালিয়ে ভারতের সাপরোম একটি ক্যাম্পে পৌঁছি। সেখানে বেশকিছু দিন প্রশিক্ষণ নিয়ে তিনি আবারও দেশে চলে আসেন। পরে এই যোদ্ধা দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

পরে বঙ্গবন্ধুর ডাকে ১ নম্বর সেক্টরে কাজ করি। বঙ্গবন্ধু দেশকে বাঁচানোর জন্য নিজের জীবন বাজি রেখেছেন। সেইদিন আমরা প্রতিজ্ঞা করি, এই দেশে স্বাধীন যতোদিন না হবে ততদিন পর্যন্ত মহান মুক্তিযুদ্ধের এই সংগ্রামে আমাদের অবদান রাখতে হবে। তখন আমি ১৬ বছর বয়সে ৯’ম শ্রেণী পড়ুয়া শিক্ষার্থী ছিলাম। তিনি জানান দেশের লাল-সবুজের পতাকা জন্য মুক্তিযুদ্ধে যাওয়া ছিলো তার এক অদম্য সাহস আর ইচ্ছাশক্তি।

Please follow and like us:

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button