আমার ক্যাম্পাস

চুয়েট ক্যাম্পাসে দৃষ্টিনন্দন চা বাগান

সবুজ স্বর্গ চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় চুয়েট। ১৭১ একর জায়গা জুড়ে সবুজ সুন্দরে ভরা। দীঘল বৃক্ষ ছায়া, পাখির কলতান- এই ক্যাম্পাসকে করে তুলেছে আরো নান্দনিক ও মনোহরা। এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে তুলতে সবসময় নানা উদ্যোগ নেয়া হয় এখানে। তেমন একটি উদ্যোগের নাম- চুয়েট চা বাগান।।

জানা যায়, প্রতি বছর এই সাজানো গোছানো চুয়েট ক্যাম্পাস দেখতে হাজারো পর্যটক, দর্শনার্থী আসেন। দেশ কিংবা বিদেশ থেকে আগতরা একবার চুয়েট ক্যাম্পাসে ঢুঁ মারতে পছন্দ করেন। কারণ এখানে পরিপাটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দেখা মিলে। এখানে সব স্থাপনা, এমনকি সড়ক থেকে সড়ক দ্বীপ সবকিছুই সুপরিকল্পিত এবং দেখতে একেবারে যেন স্কেল দিয়ে ঠিক করা। এছাড়া হরেক রকম ফুল, ফল, ওষধি, বনজ বৃক্ষ, সাথে লতা-গুল্ম দিয়ে আচ্ছাদিত এই ক্যাম্পাস।

এছাড়া আছে একাধিক লেক, বড় পুকুর, খাল, ছড়া। এখন তাতে যোগ হচ্ছে চা বাগানের চিরসবুজ সৌন্দর্য। চুয়েট ক্যাম্পাসে পরিবেশ সচেতনতা নিয়ে একাধিক সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে নানা কাজ করে যাচ্ছে। এরমধ্যে আছে ছাত্রদের নিয়ে গড়া গ্রিন ফর পিস্। এই সংগঠনের পরিবেশ নিয়ে নানাবিধ কাজ সকলের প্রশংসা পাচ্ছে।

এছাড়া আছে চুয়েট বার্ড ক্লাবসহ আরো সংগঠন। পাশাপাশি প্রশাসনের পক্ষ থেকেও পরিবেশ সুরক্ষাকে প্রাধাণ্য দেয়া হয়। গ্রিন টেকনোলজি ব্যবহারসহ নানা পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ চলমান থাকে অবকাঠামো উন্নয়নে। এরই অংশ হিসেবে এবার সৃজন করা হচ্ছে চা বাগান।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চুয়েটের একটি পাহাড়ি ঢালু অংশে এই চা বাগান সৃজন করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে প্রায় দুই একর জায়গায় এটি চালু করা হচ্ছে। যাতে রোপণ করা হচ্ছে ২০০০টি চারা। উক্ত চারা কোদালা টি গার্ডেন থেকে অনুদান হিসেবে পাওয়া গেছে। এই চা বাগানটি সৌন্দর্য বর্ধনের স্মারক হিসেবে থাকবে। এটি মূলত: সবুজ সৌন্দর্য ছড়ানোর জন্য তৈরি করা হচ্ছে। গাছ পরিপুষ্ট হলে সৌখিন হিসেবে হয়তো সীমিত পর্যায়ে ব্যবহারও করা যাবে।।

এ সম্পর্কে উক্ত চা বাগান সংশ্লিষ্ট কাজ শুরু থেকেই এগিয়ে নিয়ে যাওয়া চুয়েটের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মোহাম্মদ ফজলুর রহমান বলেন, চা বাগান গড়ে তোলার জন্য শুরু থেকেই সকলের মাঝে উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গেছে। উপাচার্য প্রয়োজনীয় অনুমোদনসহ সার্বিক দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন। চুয়েট পরিবারের সকলে এই কাজে সন্তুষ্ট এবং এটিকে সবুজ সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে নতুন মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। প্রশাসনিক অনুমোদনের পর আমরা স্থানীয় কোদালা টি-গার্ডেন কর্তৃপক্ষের সাথে দাপ্তরিক যোগাযোগ শুরু করি। এরপর অনুদান হিসেবে চা চারা পাওয়া যায়। পাশাপাশি যাবতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শও দেয় তারা। উক্ত কর্তৃপক্ষের দক্ষ জনবল জায়গাটি তৈরি করে দেয়।

চা বাগান গড়ে তোলা সম্পর্কে উক্ত উদ্যোগে সংশ্লিষ্ট চুয়েট এর পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. জি. এম. সাদিকুল ইসলাম। বলেন, ক্যাম্পাসের সুন্দর পরিবেশ গড়ার লক্ষে আমাদের এই উদ্যোগ। আমরা চাই আমাদের ক্যাম্পাসরে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বাড়ানোর পাশাপাশি। ক্যাম্পাসের পরিবেশে আরও বেশি আকারে যাতে সুন্দর হয়। এই চা বাগানের পাতা থেকে গ্রিন টি তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে বলে তিনি জানান।

এ সম্পর্কে চুয়েট এর উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, আমাদের ক্যাম্পাস প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা। আমরা সারা বছর সৌন্দর্য বর্ধনের নানা কাজ করে থাকি। এরই অংশ হিসেবে একটি চা বাগান সৃজন করা হচ্ছে। এতে চুয়েট পরিবার এবং এখানে আগতরা এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। আমি এইকাজে সংশ্লিস্ট সকলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বিশেষ করে কারিগরি পরামর্শ, সহযোগিতা এবং চা চারা অনুদান হিসেবে দেয়ার জন্য রাঙ্গুনিয়া কোদালা চা-বাগান কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই। এই চা বাগানের রক্ষণাবেক্ষণে সকলকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানাচ্ছি।

এ উপলক্ষ্যে ১৯ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে চা বাগান সৃজন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম।

এ সময় স্থাপত্য  ও পরিকল্পনা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল হাছান, রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. ফারুক-উজ-জামান চৌধুরী, পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. জি.এম. সাদিকুল ইসলাম ও অধ্যাপক ড. আয়শা আখতার, যন্ত্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. সানাউল রাব্বী, ডেপুটি রেজিস্ট্রার (একাডেমিক ও ছাত্রবৃত্তি) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মোহাম্মদ ফজলুর রহমান, জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলামসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন।

 

Please follow and like us:

Related Articles

Leave a Reply

Back to top button