কৃত্রিম নয় প্রাকৃতিক অক্সিজেনই সিআরবিতে জরুরি
শেখ বিবি কাউছার:: যেকোনো কাজ করার আগে প্রয়োজন সুষ্ঠু পরিকল্পনা। সে পরিকল্পনার মধ্যে পরিবেশগত বিষয়টি আমাদের মাথায় রাখা দরকার। মাথায় আসল হুট করে চালু করলাম আবার হুট করে বন্ধ করে দিলাম। এজন্য প্রয়োজন গবেষণালব্ধ সুষ্ঠু পরিকল্পনা। একটা নতুন কাজ শুরু করলে এটার ফলাফল পঞ্চাশ কিংবা একশত বছর পর কি হবে সেটা মাথায় রেখেই করা উচিত। প্রকৃতির সাথে সমন্বয় করে আমাদের সকল কাজ করা উচিত।
বর্তমানে একটি বিষয় খুব আলোচিত আর সেটা হলো চট্টগ্রামের সিআরবিতে বেসরকারি ইউনাইটেড এন্টারপ্রাইজ কোম্পানি লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠান ছয় একর জমিতে ৫০০ শয্যার হাসপাতাল, ১০০ আসনের মেডিকেল কলেজ ও ৫০ আসনের নার্সিং ইনস্টিটিউট স্থাপন করার পরিকল্পনা নিয়েছেন।
‘চট্টগ্রামের ফুসফুস’ খ্যাত ছোট-বড় পাহাড়-টিলার সমন্বয়ে মোট ২১০ একর জুড়ে বিস্তৃত এলাকাটি।
ভাবতেই অবাক লাগে কাজটি শুরু হলে কাটা হতে পারে বেশি কিছু গাছগাছালি। যার ফলে পরিবেশগত হুমকিতে পড়বে পুরো এলাকাটি।
চট্টগ্রাম শহরের বুকে এমন বৃক্ষশোভিত উন্মুক্ত উদ্যোন আর আছে বলে মনে হয়না। আর এই জায়গাটির গুরুত্ব ইতিমধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে আলোচনায় এসেছে। তাই আর সে আলোচনায় যাবনা।
ফরাসি দার্শনিক ভলতেয়ার বলেছেন, “মানুষ তর্ক করে আর প্রকৃতি কাজ করে।” আসলেই, যখন নেয়া হল এই সিদ্ধান্ত ঠিক তখনো সেই বড় বড় বিশাল গাছগুলো আমাদের অক্সিজেন দিয়ে যাচ্ছে অবিরত, এক সেকেন্ডের জন্যও তারা থেমে নেই। কিন্তু আফসোস একুশ শতকের এই করোনা মহামারি থেকেও আমরা শিক্ষা নিতে পারলাম না যে, কৃত্রিম অক্সিজেনের ভিড়ে প্রাকৃতিক অক্সিজেন কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেই চৌদ্দশত বছর পূর্বে পরিবেশ সম্পর্কে বলে গেছেন। আর তাহলো, “ তুমি যদি নিশ্চিত ভাবে জান যে কেয়ামত এসে গেছে,তথাপি তোমার হাতে যদি একটি গাছের চারা থাকে,যা রোপণ করা যায়, তবে সেই চারাটি রোপণ করে দেবে।”( আল হাদিস)।
অতএব সকলের সচেতনতায় বাচঁতে পারে এই সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশ। একজন নাগরিক হিসেবে এই সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা করতে সরকারের কাছে বিনীত অনুরোধ জানাই।
লেখকঃ প্রভাষক, ইসলামের ইতিহাস সংস্কৃতি বিভাগ নোয়াপাড়া ডিগ্রি কলেজ রাউজান, চট্টগ্রাম।