উন্মেষ ১৯৭১ | উম্মে হাবিবা চৌধুরী
উম্মে হাবিবা চৌধুরী::
পথের রেখায় পদচিহ্ন
রেখে যায় দুরন্ত হাওয়া,
যে সময় একবার যায় চলে
কভু আসেনা আর ফিরে।
ধূলোর আস্তরণে জমে থাকা
বাস্তবতার রূঢ় কষাঘাত,
কিছু স্মৃতি কিছু ইতিহাস
তবুও রয়ে যায় কষ্টিপাথরে অঙ্কিত
আজীবন অমলিন অনন্য।
আকাশ ঘিরে মেঘের ছায়া
অন্ধকারে বিষাদ কায়া
ধরার পানে আছে ছেয়ে
আলোক মেদুর সন্ধ্যাতারা।
চৈতন্য প্রবাহে অশান্ত প্রবাহের ধারা
ধমকা হাওয়ার মতো
হৃদ্য মননে চিত্ত বাতিঘরে
ভিড় করে হাজারো শব্দমালা।
শতাব্দীর ছুঁয়ে যাওয়া
নির্মম অনুভূতি
একাত্তরের রক্তাক্ত জমিন
বাংলা মায়ের প্রসব বেদনা।
তোমার আঁচলে গাঁথা
পৈশাচিক কাঁটার আঁচড়ে
ক্ষত বিক্ষত লক্ষ বীরাঙ্গনার ছবি
আত্মসম্ভ্রম বিসর্জনের কান্না।
তোমার বুকে আজো কান পেতে যায় শোনা
উদ্দীপ্ত বলয়ে লড়ে যাওয়া
লক্ষ লক্ষ শহীদের পায়ের শব্দ
অরুণোদয়ের প্রলয়ধ্বনি দীপ্তকন্ঠ।
লক্ষ লক্ষ আহত বীর মুক্তিযোদ্ধা
দুঃসহ জীবনের বয়ে চলা
পঙ্গুত্বের নিদারুণ দায়ভার
অকুণ্ঠ চিত্তে বেঁচে থাকা।
ধূর্ত শৃগালের কঠিন শিকল
করেছিল আবদ্ধ তোমার স্বাধীন সত্তা
হয়েছিলো রুদ্ধ তোমার প্রতিবাদের ভাষা
নিংড়ে নিয়েছিলো তোমার বুকের মাংস
করতে চেয়েছিলো তোমাকে নির্বোধ মেধাশূন্য।
শকুনের আক্রমণ —
দেহখানা তোমার হয়েছিল পরিণত
জ্বলন্ত নরকধাম অগ্নিভষ্ম শ্মশান।
মার্চে শুরু হওয়া
দীর্ঘ নয়মাসের রক্তক্ষয়ী
প্রসববেদনায় কাতর তুমি
১৬ই ডিসেম্বরে হেসেছিলে
বিজয় উল্লাসের সকরুণ হাসি।
দীপ্তপায়ে এগিয়ে যাওয়া
হাজারো জনতা তোমার সন্তানেরা
করিবে রক্ষা তোমার মর্যাদা,
হে স্বাধীনতা তোমার জমিন
আমার অহংকারের পতাকা,
জয় বঙ্গবন্ধু, জয় বাংলা,
স্বাধীন বাংলাদেশ।